শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৮

গল্প: পাবনার পাগলি / পর্ব: ১৪


গল্পঃ #পাবনার_পাগলি
পর্বঃ ১৪
.
লিখাঃ অর্দ্র
.
লং জার্নির পর বাড়িতে পৌছালাম । কত দিনের চেনা পরিবেশে ফিরে আসলাম । দুই দিনেই মন কেমন জানি আনচান করতেছিলো ।
এখন একটু ঘুমানো দরকার । সন্ধ্যা প্রায় হয়ে গেছে । তাই অর্দ্রী আর ঘুমাতে দিলো না । বলে কিনা একটু পর রাতে খাবার খেয়ে একবারে ঘুমাতে । আমিও অনিচ্ছা সত্ত্বে তার কথাতে সায় দিলাম । রাতে খাবার খেয়ে ঘুমাতে চলে গেলাম ।
কেমন লাগে বলেন । এখন আর ঘুম আসছে না ।
অর্দ্রী আসলো । মন টা আমার গান গাইতে শুরু করল
-"আজ মনে হয় চান্স আছে, আজ মনে হয়ে চান্স আছে"
-কোনো চান্স নাই
-আমি কি বলছি তুমি বুঝলা কেমনে
-তোমার ভেতরে সব কুবুদ্ধীই আমি বুঝি
-কিন্তু কেমনে
-এমনে
-যাইহোক চান্স নাই কেন
-কারণ আমরা এখন লেখাপড়া করছি, তুমি চাকরি পাবা তারপর ওকে
-না, আমি এসব বুঝিনা, একটা নির্দিস্ট সময় দাও
-নির্দিষ্ট সময় কেন
-কারণ যদি কখনো চাকরি না পাই তাহলে....
-আচ্ছা ৪ বছর পর
-আল্লাহরে এত্ত দেরি
-হু
-এতদিন তোমাকে ছাড়া দুরে থাকবো কি করে
-দুরে কে বললো, এই তোমার কত্ত কাছে তোমাকে জরিয়ে রেখেছি দেখছনা
-হু দেখছি
-আচ্ছা ঘুমাও বাবু
-আচ্ছা
ঘুমিয়ে পড়লাম...
-এভাবে রোজ রোজ ঝগড়া, অভিমান, রাগ, ভালোবাসা, খুনসুটির মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন চলছিল ।
লেখাপড়া, রোজ একসাথে কলেজে যাওয়া, কলেজে গিয়ে ওর বান্ধবীর সাথে টাংকি মারতাম । এটা দেখে ও অনেক রেগে যেত । বাড়িতে এসে গাল ফুলিয়ে মুখ ভার করে বসে থাকতো । আমি তার রাগ ভাঙানোর বদলে আরো রাগিয়ে দিতাম । এতকিছু সহ্য করতে না পেরে বালিশে মুখ গুজে কান্না শুরু করে দিতো । এটা আমি একদম সহ্য করতে পারতাম না । বুকের মধ্যে জরিয়ে নিতাম ওকে । কেদে কেদে আমার শার্ট ভিজিয়ে দিতো । আর একরাশ অভিমান ভরা অভিযোগ করতো । কাদতে কাদতে বলতো তাই একটা কথাও স্পস্ট হতো না । আমি শুধুই হাসতাম ।
.
এভাবেই আবেগ, ভালোবাসা, খুনসুটি, রাগ, অভিমান, হাসি কান্না, ইত্যাদির মধ্য দিয়ে ৪ টা বছর কেটে গেল । এই ৪ বছর আমার জীবনে খুবই সংক্ষিপ্ত ছিল ।
কিভাবে এতটা সময় কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না ।
.
অফিসে বসে আনমনে এসব ভাবতেছিলাম ।
আমার কলিগ রাফি কখন যে এসেছে বুঝতেই পারিনি । আমি আনমনে বসে আছি দেখে সে আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বল্ল,
-অর্দ্র সাহেব আপনার ফোনটা বাজছে
তার কথা শুনে যেন বাস্তবে ফিরে এলাম
-ও হ্যা
ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মেঘার উৎকন্ঠা কন্ঠ শূনতে পেলাম ।
--হ্যালো ভাইয়া, তারাতারি আসো আপু অজ্ঞান হয়ে গেছে
-কিহ, কিভাবে
-পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে
-তারাতারি হাসপাতালে নিয়ে যাও, আমি আসতেছি
-আমরা যাচ্ছি তুমি তারাতারি আসো । 
কোনোকিছু না ভেবেই অফিস থেকে বেরিয়ে পড়লাম । 
আরেহ, আপনাদের তো বলাই হলোনা, ৬ মাস হলো মেঘা আর অভ্রের বিয়ে হয়েছে । 
হাসপাতালে এসে দেখি বাড়ির সবাই এসেছে । 
-কি হয়েছে
-চিন্তা করিস না
-চিন্তা করা লাগেনা, চিন্তা এমনিতেই হয় ।
.
একটুর ডাক্তার এসে যা বলল । সেটা শুনে এততা খুশি হয়েছি যততা খুশি আগে হয়নি । আমি বাবা হতে চলেছি । এতো মহা খুশির সংবাদ । 
.
অর্দ্রী কে নিয়ে বাড়িতে চলে এলাম । বাড়িতে আসার পর থেকে একটা কাজও করতে দিইনি ওকে । ওর এখন রেষ্ট দরকার । ও কেন কাজ করবে । 
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর শুয়ে পড়লাম । 
-দেখো, এখন থেকে নিজের খেয়াল রাখবা
-হু
-ভারি কোনো কাজ করার দরকার নেই । যদি শুনি যে করেছো তাহলে তোমার খবর আছে
-ঠিক আছে মহারাজ
-আচ্ছা বলতো আমাদের ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে
-ছেলে
-আমারো তাই মনে হয়
-নাম কিন্তু আমি রাখবো
-কি নাম
-হিমু
-আর যদি মেয়ে হয়
-তাহলে হিমি
-কবে থেকে ঠিক করে রাখছো হু
-৪ বছর আগে থেকে
-কিহ,
-হু
-
-আমাকে আগে বলোনি কেন
-তোমাকে সারপ্রাইজড দিবো তাই
-তুমি খুব খারাপ
-কি বললি
-তুমি অনেক ভালো আমার বাবুর আম্মু
-এখন থেকে তুমি আমার কথা মতো চলবা, তা নাহলে আমরা মা ছেলে মিলে তোমাকে আচ্ছা মতো দিবো
-বললেই হলো, আমার ছেলে আমার পক্ষে
-জ্বি না স্যার, সে আমার পক্ষে
-কাভি নেহি, আমি আর হিমু মিলে রোজ বিকালে পার্কে গিয়ে টাংকি মারবো, আমার ছেলেকে সেইরকম জিনিস বানাবো
-কি বললা তুমি
-হ, আমার ছেলেকে বানাবো মেয়ে মারা কল
-এসব ঠিক না
-কি ঠিক না, কত্ত গুলা জিএফ নিয়া ঘুরবে, তুমি শুধু চাইয়া চাইয়া দেখবা, আমি হবো চিঠি আদান প্রদান কারি
-আমি এমন হতেই দিবোনা
-আমি দিবো, এতদিন মেয়েরা ছেলেদের ছ্যাকা দিছে আর আমার ছেলে সব মেয়েদের ছ্যাকা দিবে, তখন মেয়েরা সিগারেট খাবে, দারুণ হবে ব্যাপারটা তাইনা
-তুমি তো আসলেই একটা বদ পুলা
-আরেহ না, আমি হলাম ইজি বাপ আর আমার পুলা হলো বিজি পুলা, মানে ইজি বাপের বিজি পুলা
-হইছে, আপনার লেকচার এখন থামান, এখন ঘুমান
-আগে তুমি ঘুমাও
-আমার ঘুম আসছে না
-কেন
-জানিনা গো
-আসো তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিই
-আচ্ছা দাও
.
আমি ওর চুলে বিলি কেটে দিচ্ছি । ও কেমন ড্যাপড্যাপ করে তাকিয়ে আছে । 
-
-এইভাবে তাকিয়ে আছে কেন
-দেখছি
-কি 
-তোমাকে
-আমাকে দেখার কি আছে
-তোমাকে পেয়ে আমি অনেক সুখি
-আমিও
-আচ্ছা আমার যদি কিচ্ছু হয়ে যায়, তাহলে কি হবে
-থাপ্পড় দিয়া দাত ফালায় দিমু
-কেন
-কিছু হলে আগে আমার হবে তারপর তোমার
-নাহ, আগে আমার হবে, তোমাকে ছাড়া যে আমি বাচবো না
-মনে হয় আমি বাচবো 
-আচ্ছা আমারো কিছু হবেনা তোমারো কিছু হবেনা ঠিক আছে.?
-হু
-আমাকে একটু জরিয়ে ধরে ঘুমাও তো
অর্দ্রী কে বুকের মধ্যে লুকিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম । 
.
গর্ভবতী হবার পর থেকে সবাই অর্দ্রী কে অনেক বেশি কেয়ার করে । সব থেকে বেশি কেয়ার করে মেঘা । আমি অফিস গেলে অর্দ্রীকে খাওয়ানো । ওসুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে প্রায় সব কাজই মেঘা করে । 
.
অফিস থেকে ফিরে আমি যতটুকু পারি ওর যত্ন নিতে কোনো কমতি করিনা । আমি ওকে কাজ করতে বারণ করি তবুও ও আমি ফিরলেই বিভিন্ন টুকটাক কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । 
.
-এই আজকে আমাকে একটু কোলে নিবা
-এখন তো তুমি মুটকি হয়ে একেবারে নুনের বস্তা হয়ে গেছো
-কি বললা
-না কিছুনা
বলে অর্দ্রীকে কোলে নিয়ে ছাদে গেলাম । গল্প করতে করতে বলে গান শুনাতে । শুনলাম । একসময় ঘুমিয়ে পড়লো । আবার তাকে কোলে নিয়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম...
.
-এইভাবে তাকিয়ে আছে কেন
-দেখছি
-কি 
-তোমাকে
-আমাকে দেখার কি আছে
-তোমাকে পেয়ে আমি অনেক সুখি
-আমিও
-আচ্ছা আমার যদি কিচ্ছু হয়ে যায়, তাহলে কি হবে
-থাপ্পড় দিয়া দাত ফালায় দিমু
-কেন
-কিছু হলে আগে আমার হবে তারপর তোমার
-নাহ, আগে আমার হবে, তোমাকে ছাড়া যে আমি বাচবো না
-মনে হয় আমি বাচবো 
-আচ্ছা আমারো কিছু হবেনা তোমারো কিছু হবেনা ঠিক আছে.?
-হু
-আমাকে একটু জরিয়ে ধরে ঘুমাও তো
অর্দ্রী কে বুকের মধ্যে লুকিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম । 
.
গর্ভবতী হবার পর থেকে সবাই অর্দ্রী কে অনেক বেশি কেয়ার করে । সব থেকে বেশি কেয়ার করে মেঘা । আমি অফিস গেলে অর্দ্রীকে খাওয়ানো । ওসুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে প্রায় সব কাজই মেঘা করে । 
.
অফিস থেকে ফিরে আমি যতটুকু পারি ওর যত্ন নিতে কোনো কমতি করিনা । আমি ওকে কাজ করতে বারণ করি তবুও ও আমি ফিরলেই বিভিন্ন টুকটাক কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । 
.
-এই আজকে আমাকে একটু কোলে নিবা
-এখন তো তুমি মুটকি হয়ে একেবারে নুনের বস্তা হয়ে গেছো
-কি বললা
-না কিছুনা
বলে অর্দ্রীকে কোলে নিয়ে ছাদে গেলাম । গল্প করতে করতে বলে গান শুনাতে । শুনলাম । একসময় ঘুমিয়ে পড়লো । আবার তাকে কোলে নিয়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম...
.
Continue....
.
#অর্দ্র

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 Single Idiots

গল্পঃ #3_Singe_Idiots Part: 02 . লিখাঃ অর্দ্র . -তোদের দুইটারে কতবার বলেছি যে এইবার অন্তত ঝামেলা করিস না(অর্দ্র) -........ -কাজটা কে...