গল্পঃ লাজুক ছেলে
পর্বঃ ০৩
.
লিখাঃ অর্দ্র
.
বাসায় এসে ভাবতে লাগলাম ডাইনী মেয়েটাকে নিয়ে কি গল্প লিখা যায় । অনেক ভেবেও মাথায় কিছু আসলো না । ডাইনী মেয়েকে নিয়ে গল্প লিখা যায় বলেন । আমি তো আর হরর রাইটার না । কিভাবে শুরু করবো এটা ভাবতে ভাবতে প্রথম দিন কেটে গেলো । আমার নাম্বার অফ করে রেখেছি তাই আমাকে ফোন করতে পারছেনা বাট ফেসবুকে অনেক বিরক্ত করতেছে । মেসেজ ব্লক করে রাখলাম । তারপর থেকে কমেন্টে সুনামি, টর্নেডো, ভুমিকম্প সব হয়ে গেল বাট আমি সেদিকে নজর দিইনাই । অনেক ভেবে একটা গল্প লিখে রাত ২ টার সময় পোষ্ট করেছি । এবার নিশ্চিন্তে কালকে কলেজে যাওয়া যাবে ।
পরদিন মনে একরাশ ফুর্তি নিয়ে কলেজে গেলাম । কলেজে পা রাখতেই দেখলাম অর্দ্রী আমাকে লক্ষ্য করে আসতেছে ।
-তোর এতবড় সাহস তুই আমাকে ব্লক করিস
-না মানে, তখন গল্প লিখছিলাম
-আপনি বারবার মেসেজ তাই মেসেজ ব্লক করেছি
-গল্প লিখা হইছে
-হুমম
-গুড বয়
-হুমম
-তোর নাম্বারটা দে
দিয়ে দিলাম
-থ্যাংকু
-আপনি কি এখন থেকে আবার ফোন দিবেন
-না এমনি শুধু সেভ করে রাখলাম ।
-আচ্ছা
আমি গাছটার নিচে বসে আছি । এমন সময় একটা মেয়ে
-এই ছেলে কিসের এত ভাব তোমার
-আপু আপনি কে
-তা জেনে তোমার দরকার নাই
--তাহলে আমার সাথে এমন করে কথা বলছেন কেন
-না,সব সময় খুব ভাব নিয়ে থাকো তাই জিজ্ঞেস করলাম
-দেখেন আপু আমি ভাব নেইনা
-নাও, মেয়েদের প্রতি তোমার এলার্জি আছে নাকি ।
-না
-তাহলে মেয়েদের থেকে এত দুরে থাকো কেন
-এমনি
-প্রেম করার ইচ্ছা হয়না.?
এমন সময় অর্দ্রীর আগমন ।
-ওর প্রেম করার ইচ্ছা হলেই কি আর না হলেই তাতে তোর কি প্রবলেম
-কোনো প্রবলেম নাই
-তাহলে ওর সাথে কথা বলতে এসেছিস কেন
-ওকে আমার খুব ভালো লাগে তাই
-কি বললি তুই, ভালোই ভালোই বলছি ওর দিকে চোখ তুলে তাকাবিনা
-আমি ওর সাথে কথা বললে তোর প্রবলেম কি
-প্রবলেম আছে
-কি প্রবলেম শুনি
-কি আবার, ও আমার বিএফ ওকে.?ওর দিকে চোখ তুলে তাকবিনা না, কথা বলা তো দুরের কথা
বলে অর্দ্রী আমাকে টেনে নিয়ে চলে গেল ।
-ওই মেয়ের সাথে যদি আর একদিন কথা বলিস তাহলে তোর কপালে দুঃখ আছে ।
-ধেত কালকে থেকে আর কলেজেই আসবোনা,
-তুই আসবিনা তোর বাপ আসবে
-আসলে আসুক আমি আসবোনা ।
-তার মানে তুই ওই মেয়ের সাথে কথা বলবি তাইতো
-বললে কি হবে, মেয়েটা কত্ত কিউট
-ঠাসসসসসসসসসসস
-......
-আরেকবার বলতো
-.....
-তুই শুধু আমার দিকে তাকাবি আমার সাথে কথা বলবি, আর কারো সাথে না ওকে.?
-ঠিক আছে
-এই তো গুড বয়
-সবাই সেটা জানে
-কি জানে-রাজশাহীর ছেলেরা ভালো হয়, এটা সবাই জানে
-জ্বি না, এরা হলো মিসকি শয়তান । কি যেন বলে, উপরে ফিটফাট ভিতরে সদর ঘাট
-এটা হয়তো রাজশাহীর মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য
-কি বললি তুই
-কি বলিনি শুধু বলেছি, আমি খুব ভালো
-ওমা তাই
-হুমম
-তুই একটা ফাজিল
-আপনি ডাইনি
-তুই ডাইনির বর হিমার্দ্রী'র হিমার্দ্র
-উফফফ পেইন
-পেইন টু
.
এই মেয়ের মতলব কিছু বুঝতে পারছিনা । কি চাই আমার কাছে । অন্যকে বলে আমার জিএফ । আরে যদি ভালোইবাসতো তাহলে কি এত জোরে থাপ্পড় মারতে পারতো ।
.
কলেজে থেকে এত্তগুলা রুলস পেলাম । আর সবই দিয়েছে অর্দ্রী । বাসায় এসে ঘুমিয়ে পরলাম । সন্ধ্যার পর ঘুম ভাঙলো । এইরে আবার জর এসেছে । ইসসস ঔষুধ খেয়ে ঘুমানো উচিত ছিলো । এখন তো তিন দিনে ছাড়বেনা । কলেজেও যেতে পারবোনা ।
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি অর্দ্রী অনেকটা মিসডকল । দেখেও ব্যাক করলাম না । হালকা খেয়ে ঔষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম ।
সকালে আম্মুর কথা শুনে ঘুম ভাঙলো । কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে । আরেহহ এটা তো আমার ফোন । আমার ফোন দিয়ে কার সাথে কথা বলছে । এমা আমাদের বাসার ঠিকানা টাও দিচ্ছে দেখছি ।
-কিরে এখন শরীর কেমন আছে
-খুব একটা ভাল না, তুমি কার সাথে ফোনে কথা বলছিলে
-এখনো সঠিক পরিচয় পাইনি, তবে পেয়ে যাবো
--মানে কি, চিনোনা তাহলে বাড়ির অ্যাড্রেস দিলে কেন
-চেনার জন্য দিয়েছি
-কি বলছো কিছুই বুঝতেছিনা আমি
-তোর বুঝা লাগবেনা, তুই খেয়ে ঔষুধ খেয়ে নে
কি আর করবো । খেয়ে ঔষুধ খেয়ে শুয়ে পড়লাম । খুব ঠান্ডা লাগতেছে । একটু পর কে যেন কলিংবেল বাজালো । আম্মু দরজাটা খুলে দিল ।
-আসসালামু আলাইকুম অ্যান্টি
-ওয়ালায়কুম আসসালাম,তুমি.?
-অ্যান্টি আমি ফোন করেছিলাম ।
-ও ভেতরে এসো
.
-তোমার নাম কি মা
-অর্দ্রী
-এমা তাই নাকি
-হ্যা অ্যান্টি
-আমার ছেলের পছন্দ আছে বলতে হবে
-.....
-নামের যেমন মিল তেমনি সুন্দর দেখতে
..
এইরে হ্রামিটা এসে পরেছে । বাসায় তো আব্বু আছে । এখন কি হবে ।
-কই দেখ যাও কে এসেছে
-কে এসেছে
-দেখে যাও
-তুমি যে মা
-অ্যাংকেল আমি অর্দ্রকে ভালো বাসি
-তাই নাকি
-হ্যা
-আমি যদি তোমাদের বিয়ে না দেই
-দিবেন না মানে, দিতেই হবে । না দিলে আমি অর্দ্র রে তুইলা নিয়ে যাবো হু
-কও কি
-হু, আগে থেকেই বলে দিচ্ছি অন্য কোথাও বিয়ে দেওয়ার চেস্টা করবেন না, তাহলে আপনাদের খবর আছে ।
-বাপরে বাপ, এইটা মেয়ে নাকি এটম বোম
-যা খুশি ভাবতে পারেন
-আব্বাজান এইডা তুই কোন মাইয়ারে ভালোবাসলি যে আমারে থ্রেট দেয়
-আব্বা আমি কিচ্ছু জানিনা তোমাদের ব্যাপার তোমারা বুঝো গা
--ওই তাদের ব্যাপার মানে, ব্যাপার টা তোর আর আমার বুঝলি
-আমি অসুস্হ আমাকে ধমকাবেন না প্লিজ
-ঔষুধ খায়ছিস
-না
-কোন রাজ্যের কাজ উদ্ধার করতে গেছিলি যে ঔষুধ খাসনি
ঘুমিয়ে ছিলাম তো তাই
ঔষুধ ড্রেসিনে রাখা ছিল । সেখান থেকে অর্দ্রী ঔষুধ নিয়ে এসে খাইয়ে দিল । এসব দেখে আব্বু আম্মু মিটিমিটি হাসতেছে ।
-কালকে তারাতারি কলেজে আসবি মনে থাকে যেন
তারপর আব্বু আম্মুর সাথে কি যেন বলে চলে গেল ।
রাতে ফেবুতে একটা পোষ্ট করলাম ।
"আমার বউ হতে হলে এরকম গুন্ডি হলে চলবেনা, রোমান্টিক হতে হবে..."
তারপর ফেবুতে থেকে বের হয়ে এলাম । এখানে থাকলে ঝগড়া করতে হবে তাই চলে আসলাম ।
পরদিন কলেজে গিয়ে কোনোদিকে না তাকিয়ে চুপচাপ ক্লাশে গিয়ে বসলাম । অর্দ্রী কোথা থেকে যেন এসে কলার ধরে বলে..,
-ওই আমি গুন্ডি.?
-হ্যা সেই জন্যই তো কলার ধরেছেন
-আমি রোমান্টিক না.?
-না
-কি বললি তুই
-হ্যা, একদিনও আদর করে কথা বলেননি, জরিয়ে ধরেন নি, সব সময় ঝাড়ির উপর রেখেছেন
বলতে না বলতেই অর্দ্রী আমাকে জরিয়ে ধরল । আর সবাই তো হা করে তাকিয়ে আছে । আমি তো অনেক লজ্জা পাইছি আর অর্দ্রী সবাইকে ঝাড়ি দিল.....
-ওই তোরা এতক্ষণ লাইভ মুভি দেখলি টাকা বের কর..
.
-
.
"অতপর শুরু হল আরেকটা প্রেমের গল্প"
.
------The End-------
.
#অর্দ্র
মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭
গল্প: লাজুক ছেলে / পর্ব: ০৩
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
3 Single Idiots
গল্পঃ #3_Singe_Idiots Part: 02 . লিখাঃ অর্দ্র . -তোদের দুইটারে কতবার বলেছি যে এইবার অন্তত ঝামেলা করিস না(অর্দ্র) -........ -কাজটা কে...
-
গল্প: অপূর্ণ ভালোবাসা . লিখা: অর্দ্র **** কালকে ফেসবুকে ঢুকেই দেখি একটা মেয়ের ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট সাথে একটা ম্যাসেজও..... -প্লিজ হেল্প মি...
-
গল্পঃ #জ্বিন_ধরছি পর্বঃ ০১ . লিখাঃ অর্দ্র . -এই ধরছি, ধরছি, সোনা এইবার তুমি কই যাবা । -এই হতচ্ছারা আমাকে বোতলে তুলছিস কেন, ছাড় আমাকে ...
-
গল্পঃ লাজুক ছেলে পর্বঃ ০৩ . লিখাঃ অর্দ্র . বাসায় এসে ভাবতে লাগলাম ডাইনী মেয়েটাকে নিয়ে কি গল্প লিখা যায় । অনেক ভেবেও মাথায় কিছু আসলো না ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন