গল্পঃ #পাবনার_পাগলি
পর্বঃ ১১
.
লিখাঃ অর্দ্র
.
বুকের উপর থেকে লেপটা সরিয়ে আতকে উঠলাম । ও মা গো আমারে মাইরা ফালাইছে । বুকের বাম পাশে অনেক জায়াগা জুরে কেটেছে । এতক্ষণে বুকে যন্ত্রণা করতে শুরু করেছে ।
-ওই ডাইনির বাচ্চা এদিকে আয়
আম্মু আর অর্দ্রী আসলো
-এটা কি করেছিস তুই
-আমি কি করবো, তোমাদের চিনতে পারিনা তাই
-তাই বলে আমারে মেরে ফেলবি
-মেরে ফেলিনি তো শুধু কেটেছি
-তোর কি দয়ামায়া কিছু নাই, কত রক্ত বের হচ্ছে দেখছস
-বউমা, রক্ত মুছে ওখানে ঔষুধ লাগিয়ে দাও, আমি তোমাকে ঔষুধ দিচ্ছি
বলে আম্মু ঔষুধ আনতে চলে গেল । আর হ্রামি এমনভাবে রক্ত পরিষ্কার করছে যেন উঠোন ঝাড়ু দিচ্ছে ।
-উফফফফফ, আস্তে কর খুব ব্যথা করতেছে
-সোনা আমার ময়না আমার, আর কখনো কষ্ট দিবোনা, এই একবার ঠোঠে দাত চেপে সহ্য করো প্লিজ
-এখন যদি ব্লাডিং হতে হতে আমি মরে যাই
-দেখো এসব কথা একদম বলবানা
-কেন বলবনা, এমন তো হতেই পারে তাইনা
-ওকে আমিও কাটতেছি দাড়াও, আমিও মরে যাবো
বলেই উঠে যেত লাগলো । আমি অর্দ্রীর হাত ধরে হ্যাচকা টান দিলাম । ও নিজেকে সামলাতে না পেরে আমার বুকের মধ্যে এসে পড়লো ।
-ও মা গো, তোমার ছেলের আর বেচে থাকা হলোনা, আমাকে মেরে ফেললো ।
-
-সরি সরি সরি
-হু
-আজ তোমার জন্য আমি রান্না করেছি
-তাহলে তো আর খাওয়ায় যাবেনা
-কেন যাবেনা, শুনি
-শুনা লাগবেনা, আমি বাহিরে গেলাম
রুম থেকে বের হলাম । সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে । যেন তার চিড়িয়াখানায় বাঘ দেখতে এসেছে ।
-এই যে নতুন বর, প্রথম রাতেই এই অবস্থা, জানিনি তোমার কপালে যে কি আছে
-আমার যে অবস্থা হোক তাতে তোর কি
-আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে
-কেন
-আমার জানুটার এই অবস্থা আর আমার কষ্ট হবেনা তা কি হয় নাকি
-থাপড়ায়ে তোর দাঁত লাগামু
-জায়গা নাই
-কিসের
-মানে আমার সব দাঁত উঠেছে, আর লাগানোর জায়গা নাই ।
-আমার এদিকে জ্বলতেছে আর তুই ফাজলামি করতেছিস
-কি জ্বলতেছে
-কি আবার, বুক
-আমি কি ফু দিয়ে দিবো
-দুর শালি যা
বলে ছাদে গেলাম । খুব ব্যথা করতেছে তাই পোষাক পহতে পারিনি । খুব ঠান্ডা লাগতেছে তাই রোদের জন্য ছাদে গেলাভ । ওমা ছাদে গিয়ে দেখি অভ্র কার সাথে যেন রোমান্টিক প্রেম করতেছে । জানু একটা পাপ্পি দাও, লাভ ইউ জানু । এই টাইপের কথা আরকি । আমাক দেখে ফোন রেখে দিলো ।
-কি রে তোর এই অবস্থা কেন
-অর্দ্রী কে হেব্বি ভালোবাসি তো তাই নাম লিখে নিয়ে ঘুরতেছি ।
-নাকি ও লিখে দিছে
-ও লিখে দিবে কেন
-যাতে অন্য মেয়েরা নজর না দেয়
-
-যা তো এখান থেকে
-আমি না, তুই যাবি
-কই যামু
-পাবনায়
-মাথা খারাপ, ঐখানে আমি জীবনেও যাবোনা
-যেতে যে হবেই, কালকেই ওই টাকলু তোদের নিয়ে যাবে
-আল্লাহ রে
-টেনশন করিসনা, আমিও যাচ্ছি
-তুই যাবি কেন
-আরে আমার মেঘা আছে না
-শালা
-আরে শালা না, ভাইরা বল ভাইরা
-দুর শালা যা এখান থেকে
-যাচ্চি
-আর শুন, একটা চেয়ার দিয়ে যা
.
অভ্র নিচে গিয়ে একটা চেয়ার নিয়ে এল ।
-ওই শোন, আমার ফোনটা দিয়ে যা
-হ, আমি তোর চাকর নাকি বে, তোর বউকে বল যা
-তোর ফোন দে
-কেন কি করবি
-আমার ফোনে ফোন দিমু
-আমি দিচ্ছি দাড়া
বলে অভ্র আমার ফোনে কল দিল । দ্বিতীয়বার রিছিভ হলো ।
-বাড়িতে থেকে ফোন দিচ্ছ কেন
-ফোন কি আর সাধে দিচ্ছি
-কেন কি হয়েছে
-তোমার বর বুইড়া হয়ে গেছে, চেয়ারে বসে আর উঠতে পারছেনা, ওর ফোন টা দিয়ে যাও ছাদে
-ওই ওকে বুড়া বলবা না, দেখছো না কত কস্ট দিয়েছি ওকে, কত্ত ব্যাথা পাচ্ছে
-কিহ, তুমি কেটে দিয়েছো
-হুম
-ওরে আমার আল্লাহরে, আমি আর নাই, মেঘাও তোমার মত মেন্টাল তাই
-ওই একদম মেন্টাল বলবা না, আমি কত্ত চুইট একটা মেয়ে
-তুমি একটা দজ্জাল মেয়ে, আচ্ছা মেঘাও কি তোমার মতো ডাইনি
-কি বললি তুই, আমি ডাইনি.?
-আচ্ছা দাড়া,মেঘারে বলতেছি তোরে কেমনে টাইট দেয়া লাগে সেটা আমি জানি ।
-
-না না ভাবি, এইটা করোনা প্লিজ
-আমাকে ডাইনি বলেছিস
-মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে, সরি
-মনে থাকে যেন
-হুম, ফোন নিয়ে ছাদে যাও
বলে অভ্র ফোধ টা কেটে দিলো ।
-কি করে বীরপুরুষ, বাসর রাতে বিড়ার মারতে ঢুকলি, এখন তো দেখছি বিড়াল তোকে মারছে
-হু, তাতে তোর কি
-খুব তো বড় গলায় বললি যে ওকে খুব ভালবাসিস তাই ওর নাম বুকে লিখে নিয়ে ঘুরছিস, এখন তো দেখতেছি কাহিনী উল্টা
-এই তুই কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান না করে এখান থেকে যা তো
.
অভ্র চলে যেতে না যেতেই অর্দ্রী আসলো
-এই নাও তোমার ফোন
-থ্যাংকু
-হু, কার সাথে কথা বলবা শুনি
-কারো সাথে না অনেক দিন গল্প লিখিনাই, তাই গল্প লিখবো
-আচ্ছা লেখো
-আচ্ছা কালকে নাকি ওই টাকলু টা আমাদের পাবনা নিয়ে যাবে
-হ্যা, আর দেখো আমার বাবাকে টাকলূ বলবা না
-আচ্ছা বলব না
-আচ্ছা তুমি লেখো, আমি আম্মুর সাথে রান্না করবো
-আচ্ছা যাও
ফেবুতে ঢুকেই দেখি, আগের পার্টগুলাতে অনেকের কমেন্ট আছে । তার মধ্যে কয়েকজন পাবনার । তারা আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে । তাদের মধ্যে একজন হলো @[100022885479726] আসল নাম প্রিয়া । "তুই একবার পাবনাতে আয়, তোরে যদি আমি পাগলাগারদে না ঢুকাইছি তাহলে তোর মাথা ফাটামু"
এই গল্প টা যখন শুরু করেছিলাম তখন থেকে তার সাথে পরিচয় ।
-
সম্পর্ক তার সাথে খুবই ভালো । তবে যা বলেছে তা না করলেও কাছাকাছি কিছু একটা করবে । পাবনার তো তাই কোনো গ্যারান্টি নাই । সত্যি সত্যি করতে পারে ।
গল্প লেখা আর ফেবু এ থেকে সারাটা সকাল কেটে গেল । বিকালে সবাই মিলে বেড়াতে গেলাম অনেক মজা করলাম । অভ্র সাথে থাকায় একটা সুবিধা হলো । সবাইরে চোখ মারতে পারলাম । সবাই তো ভাবছে অভ্র চোখ মারছে ।
সন্ধ্যার আগেই সবাই বাসাতে চলে আসলাম । গল্প করতে বসল সবাই । আমার দিকে কারো খেয়াল নেই । যেন অর্দ্রীই তাদের সব ।
ধুর ভাল্লাগেনা।ছাদে গেলাম।গিয়ে দেখি অভ্র আর মেঘা
-ওই শালা, তোর এই লুচু প্রেম কখন শেষ হবে
-তুই যা,বিরক্ত করিস না
ওরেস্সালা,আমারে ঝাড়ি দিলো।চলে আসলাম
রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘূমাতে গেলাম
-এই তুমি কি রাগ করে আছো
-হু
-লক্ষী সোনা রাগ করেনা
-একটা কিস দাও তাহলে
সাথে সাথে কপালে একটা চুমু দিল
-আমি এখানে চাইনি
-তাহলে কোথায়
-ঠোঠে
-শালা লুইচ্ছা
-না, আমি অনেক ভাল ছেলে
-তুই যে কতটা ভালো সেটা আমি ভালো করেই জানি
-তুমি বললেই তো হবেনা, পাবলিক বলবে আমি ভালো
-দেখিতো কোন পাবলিক বলে তুই ভালো
-সবাই বলবে,জিজ্ঞেস করে দেখ
-তাই করমু, "আচ্ছা আপনারাই বলেন এই হ্লা ভালো নাকি লুইচ্চা"
.
Continue....
.
#অর্দ্র
রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭
গল্পঃ পাবনার পাগলি / পর্বঃ ১১
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
3 Single Idiots
গল্পঃ #3_Singe_Idiots Part: 02 . লিখাঃ অর্দ্র . -তোদের দুইটারে কতবার বলেছি যে এইবার অন্তত ঝামেলা করিস না(অর্দ্র) -........ -কাজটা কে...
-
গল্প: অপূর্ণ ভালোবাসা . লিখা: অর্দ্র **** কালকে ফেসবুকে ঢুকেই দেখি একটা মেয়ের ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট সাথে একটা ম্যাসেজও..... -প্লিজ হেল্প মি...
-
গল্পঃ #জ্বিন_ধরছি পর্বঃ ০১ . লিখাঃ অর্দ্র . -এই ধরছি, ধরছি, সোনা এইবার তুমি কই যাবা । -এই হতচ্ছারা আমাকে বোতলে তুলছিস কেন, ছাড় আমাকে ...
-
গল্পঃ লাজুক ছেলে পর্বঃ ০৩ . লিখাঃ অর্দ্র . বাসায় এসে ভাবতে লাগলাম ডাইনী মেয়েটাকে নিয়ে কি গল্প লিখা যায় । অনেক ভেবেও মাথায় কিছু আসলো না ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন