বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭

গল্প: পাবনার পাগলি / পর্ব: ১০

গল্পঃ #পাবনার_পাগলি
পর্বঃ ১০
.
লিখাঃ অর্দ্র
.
-ওই এভাবে আর কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকবো
-আমার রাগ যতক্ষন কমবে না ততক্ষণ
-তোমার রাগ কখন কমবে
-দুর শালা, আমি জানি নাকি
-লক্ষীসোনা রাগ করেনা, একটু হাসো প্লিজ
-কাজ হবে না
-ভাল্লাগেনা আর হবেনা করছি যে প্রমিজ
-ওকে আয় আমার পা টিপে দে
-এইটা কি কও
-যা কইতেছি সেটাই কর
-বলে বউ আমার খাটে গিয়ে শুয়ে পড়লো ।
-আমার পা টিপে দে নাহলে কান ধরে দাড়িয়ে থাক
.
ধুর কে দাড়িয়ে থাকবে । যদি বউয়ের পা টিপে দেই তবুও লাভ আছে । বউকে টাচ করতে পারবো আর দাড়িয়ে থাকতে হবেনা বসতে পারবো ।
তাই দাড়িয়ে থেকে খাটে গিয়ে বসে বউয়ের পা টিপতে লাগলাম ।
টিপতে টিপতে কখন যে ঘূমিয়ে পড়েছি মনে নাই ।
-এই হ্রামি ঘূমাস কেন উঠ
আমি ধরফর করে লাফিয়ে উঠলাম
-ঘুমাচ্ছিস কেন
-ঘুম আসলে কি করমু
-ছাদে চল
-কিহ
-হু
-এত রাতে কেউ ছাদে যায় নাকি
-আমরা যাবো
-না যাবোনা ওখানে ভুত আছে
-তোর ভুতের গুষ্টি কিলাই, আমি আছিনা.?
.
কি করবো যেতেই হবে তাই কথা না বাড়িয়ে যেতে লাগলাম ।
-ওই কই যাও
-ছাদে
-আমি যাবোনা.?
-চলো
-আমাকে নিয়ে যাও
-তুমি কি বাচ্চা নাকি যে তোমাকে হাত ধরে নিয়ে যেতে হবে
-হাত ধরে নিয়ে যেতে বলিনি, কোলে করে নিয়ে যাও
--ওর বাবারে আমি পারবোনা
-কেন পারবা না
-আমি নিজেই বাচ্চা, তোমাকে ক্যামনে কোলে নিবো
-আমি কিচ্ছু জানিনা আমাকে এখন কোলে করে ছাদে নিয়ে যাও নাহলে কিন্তু আমি জোরে করে চিল্লানি দিবো
-কেন
-তুই কোলে নিবি নাকি চিল্লানি দিমু.?
-নিচ্ছি নিচ্ছি
অর্দ্রী কে কোলে নিয়ে ছাদে যাচ্ছি
-ওরে বাবারে এইটা মানুষ নাকি নুনের বস্তা
-কি বললি তুই
-কই কিছুনা
-না, কি বলেছিস বল
-বল্লাম, তুমি এত হালকা কেন একদম তুলোর বস্তার মতো
-হু, ডায়েট কন্ট্রোল করি তো তাই
-হু তুই কিসের ডায়েট কন্ট্রোল করিস সেটা আমার বুঝা হয়ে গেছে (মনে মনে বললাম)
অনেক কস্টে ছাদে পৌছলাম । এত ভারি জিনিস নিয়ে সিড়ি বেয়ে উঠা যায় নাকি । ছাদে গিয়ে ওকে নামিয়ে দিলাম ।
-তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে
-কি
-এই দেখ তোমার জন্য মুনলাইট ডিনার এর ব্যবস্থা করছি
-ঢাকনা গুলো খুলে দেখ, তোর বোন আর অভ্র সব শেষ করেছে
(মনে মনে বললাম)
-বসো আজকে দুজনে আমরা মুনলাইট ডিনার করবো
-ডিনার করা লাগবে না নিচে চলো
-আরেহ, কত্ত কস্ট করে এর ব্যবস্থা করেছি আর করবোনা তা কি হয় নাকি, বসো বলছি
.
চুপ করে বসে পড়লাম ।
অর্দ্রী ঢাকনা খুলে চোখ বড় বড় করে পাত্রের দিকে তাকিয়ে আছে ।
-খাবার কোথায় গেল
-আমি কি জানি
-খাবারের কি ডানা আছে যে উড়ে যাবে
-হু
-তুই তখন ছাদে এসেছিলি বল খাবার কে খেয়েছে
-মেঘা আর অভ্র
-অভ্রর বাচ্চা তোরে আইজকা আমি খাইছি
বলেই নিচে নেমে আসলো । অভ্রের রুমের দরজার সামনে গিয়ে চিৎকার করতে লাগলো
-ওই হ্রামজাদা দরজা খোল
-...
-দরজা খুলবি নাকি ভাইঙ্গা ফালামু
অর্দ্রীর চেচামেচিতে আব্বু আম্মু জেগে গেছে ।
-কি ব্যাপার এত রাতে এভাবে চেচাচ্ছ কেন
-এই বান্দরের বাচ্চাকে আগে বাইরে আসতে বলে তারপর বলতেছি
-একি বউমা, আমি বান্দর
-আপনি বান্দর হতে যাবেন কেন
-তাইলে কি আমি বান্দর
-আপনারা কেউ বান্দর না. ওই অভ্র বাইরে আয়
অনেক্ষণ পর অভ্র দরজা খুলল ।
-ওই তোর তো সাহস কম না
-কেন কি হইচ্ছে
-আমার প্রানের স্বামীর জন্য আমি মুনলাইট ডিনারের ব্যবস্থা করেছি । আর তুই সব খাবার শেষ করেছিস
-আমি কি জানি নাকি যে ওটা তোমার পিয়ারি স্বামির জন্য রাখছো
-তোর জানা উচিত ছিল তুই জানিসনি কেন
-আমি কেমনে জানমু
-আমাকে জিজ্ঞেস করলি না কেন
-ওরে আম্মাজান আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে মাফ করে দে মা প্লিজ
-ইচ্ছা করতেছে তোর মাথার মধ্যে বাঁশ দিয়া বারি মারি
-তো মার
-ওই কেউ একটা লাঠি দেতো
-আমি নাই
বলে অভ্র দরজা বন্ধ করে দিল ।
-অভ্র দরজা বন্ধ করার পর অর্দ্রী অনেক চেচামেচি করে শেষে শান্ত হয়ে রুমে ফিরে আসলো ।
-আমি ঘুমাবো
-তো আমি কি জেগে থাকবো
-রেগে আছো কেন
-আচ্চা ঘুমাও, আমি ঘুমাবো
-আচ্ছা
.
আমি শুয়ে পড়লাম । একটুপর অর্দ্রী অন্য দিকে মুখ করে শুয়ে পড়লো । জরিয়ে ধরার এই অপুর্ব সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছিলাম না । তাই কোনো কিছু না ভেবেই জরিয়ে ধরলাম ।
-এই এই কি করছো
-কি আর করব পালিয়ে যেতে যেন না পারো সেজন্য ধরে আছি ।
-বেশি বেশি হচ্ছে কিন্তু
-একটু জরিয়ে ধরেছি তাতেই বেশি হচ্ছে, তাহলে যখন.....
-তাহলে যখন মানে, কি করবি তুই
-স্বামি স্ত্রী যা করে তাই
-না বাবু এইটা হবেনা
-কেন হবেনা
-আমি হতে দিবোনা
-যাহ বাবা, বিয়ে করলাম অথচ এইটা করতে পারবোনা এটা কেমন কথা
-হ্যা, বউ অনুমতি না দিলে বর করতে পারবে না
-কিন্তু বউ অনুমতি দিবেনা কেন
-তার বরটা যে পিচ্চি, এই বয়সে এত্ত ধকল সামলে নিতে পারবেনা
-পারবে
-পারবেনা
-বললাম তো পারবে
-বেশি কথা বলিস কেন, আমি বলেছি পারবেনা সো পারবে না
-ধুর ভাল্লাগেনা
-হু, শুধু জরিয়ে ধরে থাকবা, বেশি কিছু করতে চাইলে ঠ্যাং ভেঙ্গে খাটে বসিয়ে রাখবো ।
-কি হ্রামি বউ রে
-হু, সেই বুঝে চুপচাপ থাকবি
-
সকালে কারো কান্নার আওয়াজে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল । চোখ খুলে দেখি অর্দ্রী পাশে নাই । দরজা টা খুলা । মনেহয় বাহিরে গেছে । কিন্তু কাদছে কে । মনে হয় অর্দ্রী কাদতেছে । একবার মনে হলো, গিয়ে জিজ্ঞেস করি কেন কাদছে । তারপর মনেহলো এই শীতের মধ্যে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকাই ভালো । পরে একসময় জিজ্ঞেস করবো কেন কাদছে । আর উঠলাম না শুয়ে রইলাম ।
.
-এ কি বউমা কাদছো কেন.?
-কাদবো না তো কি হাসবো
-কি হয়েছে
-দুইটা একই চেহারার বাদর বানাইছেন, আমি চিনতে পারছি না, এখন আমি কি করব
বলে আরো জোরে কান্না শুরু করে দিলো ।
-এই জন্য কাদতে হবে নাকি
-.....
-তুমি কিছু একটা চিহ্ন দেখে চিহ্নিত করে নিবা যে এটাই অর্দ্র
-নিয়েছি আম্মাজান
-তাহলে তো সমস্যাই নাই
-আছে
-কি সমষ্যা
-কাল রাতে ওর বুকের মধ্যে ব্লেড দিয়ে আমার নাম লিখে দিয়েছি । ও যদি উঠে দেখে তাহলে আমার কি হবে ।
.
বলেই আরো জোরে কান্না করতে লাগলো
-আরেহ কান্না করতে হবেনা, আমি তো আছি
.
আম্মু আর অর্দ্রী কথা শুনে আমার মাথা ঘুরতেছে । আমার বুক কেটে চিহ্নিত করেছে । এত হ্রামি, দয়ামায়াহীন বউ জীবনে দেখিনি ।
.
Continue.......
.
#অর্দ্র

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 Single Idiots

গল্পঃ #3_Singe_Idiots Part: 02 . লিখাঃ অর্দ্র . -তোদের দুইটারে কতবার বলেছি যে এইবার অন্তত ঝামেলা করিস না(অর্দ্র) -........ -কাজটা কে...