মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭

গল্প: পাবনার পাগলি / পর্ব: ০৯

গল্পঃ #পাবনার_পাগলি
পর্বঃ ০৯
.
লিখাঃ অর্দ্র
.
অনেক চঢ়াই উতড়াই পার করে শেষ পর্যন্ত বিয়েটা করতে পারলাম ।
এই বিয়ে করতে কত্ত ধকল গেছে তার ঠিক নেই । যাইহোক এখন আমি বিবাহিত । এখন বলা যায় "অর্দ্র ইজ নট এ ব্যাচেলর"
কিছুক্ষণ আগেই সিঙ্গেল ছিলাম আর এখন আমি ডাবল ।
.
যাইহোক বাহিরে থেকে ভিতরে গিয়ে আমার রুমে একটা উকি দিয়ে দেখি আমার রুমটা আর রুম নেই । জনসভা হয়ে গেছে । আর নেতা হলো অর্দ্রী আর তার চামচে হলো আমার কাজিনরা ।
লোকজনে রুম ভরে গেছে । আমার জন্য জায়গা নেই ।
.
এখানে থেকে আমার আর কাজ নেই তাই ছাদে গেলাম । ওমা ছাদে দেখি একটা টেবিল আর দুইটা চেয়ার রাখা আছে । টেবিলে দেখলাম কিছু খাবার ।
বাহ, আমার জন্য । ধুর আমার ক্ষিদা লেগেছে এখন খেতে হবে । এমন সময় অভ্র আসলো । সাথে মেঘা আছে ।
-তুই এখানে আর আম্মু তোকে কখন থেকে খুজতেছে
-খেয়ে নিই, তারপর যাচ্ছি
-আরেহ না আগে শুনে আয় কি বলে
মনেহয় অনেক্ষন থেকে খুজতেছে তাই আর দেরি না করে নিচে চলে আসলাম । অনেক খুজেও আম্মু কে পেলাম । শেষে দেখলাম আমার রুম থেকে বের হচ্ছে ।
-আমাকে ডেকেছো কেন
-কখন ডাকলাম
-অভ্র বলল ডেকেছো
-মিথ্যা বলেছে
.
দাড়া মিথ্যা বলা বের করছি । উপরে গেলাম ।উপরে গিয়ে যা দেখলাম । তা দেখে আমি তো অবাক । হ্রামিরা একটা জুসের মধ্যে দুইটা নল দিয়া দুইজনে খাইতেছে ।
আহা.! কি রোমান্টিক
কিছু বললাম না, নিচে চলে আসলাম । এসে দেখি অর্দ্রী সবার সাথে টেবিলে বসে খাইতেছে । বাহ কি অসাধারণ । নতুন বউয়ের বৈশিষ্ট্য দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছিনা । লজ্জা শরম কিচ্ছু নাই । আল্লাহ এটারে কি দিয়া বানাইছে । আমি যেতেই
-আরে কই ছিলা, বসো তোমারে আমি খাওয়াইয়া দিই
সবাই হো হো করে হাসতে লাগলো
কি লজ্জা কি লজ্জা
আমি অসস্তিবোধ করছি দেখে কাজিনরা বলল
-এত লজ্জা পেয়োনা, খাইয়ে দিচ্ছে খেয়ে নাও, পরে এই সুযোগ না পেতেও পারো
অর্দ্রী খাইয়ে দিতে লাগলো, আর আমি লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে সবার সামনে খেতে লাগলাম
-এই তুমি আমাকে খাইয়ে দাও
-সবার সামনে.?
-আমি পারলে তুমি পারবা না কেন
আরে লজ্জা কিসের খাইয়ে দেতো
কিচ্ছু করার নেই, অর্দ্রীকে খাইয়ে দিতে লাগলাম ।
খাওয়া শেষে রুমে গেল । সাথে হ্রামিগুলাও গেল ।
একটুপর ভাবি বের হয়ে এল
-কি দেবর সাহেব, এখানে একা একা কি করো
-আমার সাথে এখন কেউ নাই, তাই একা
-আহারে বেচারা, আমি তো আছি
-আমি জানতাম তুমিই থাকবা
-শোনো একটুপর সবাই বের হয়ে আসবে তখন তুমি ভিতরে যাবা
--ভিতরে গিয়ে আমি কি করবো
-ওলে আমার ধোয়া তুলসি পাতারে কিচ্ছু জানেনা
-হু তাইতো
-ভিতরে গিয়ে দুজনে একলগে থাকবা, বউ বার যা করে তাই করবা
-ভাবি তুমি কি পাগল হইছো
-পাগল হবো কেন
-ওই পাবনার পাগলির সাথে একলগে থাকবো, আমার কি মাথা খারাপ
-তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবেনা, রুমে যাও আমি একটু পর আসতেছি
.
সবাই দেখি রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে । কাজিন রা যেতে যেতে বলল
-জানু, আজকেই কিন্তু বিড়াল মারতে হবে, নাহলে কিন্তু বিড়াল তোমাকে মারবে
-ধুর শালি যা তো
-ওই আমি না তোমার জানু, শালি বলছো কেন
-কিহহ জানু.??
-হুম
-যা দুরে গিয়া মর
সবাই চলে গেল । আমি একা দাড়িয়ে রইলাম । ভেতরে ঢুকার সাহস পেলাম না । কারণ ভেতরে পাগলি আছে । কামড়ে দিতে পারে ।
দরজার সামনে দাড়িয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছি । ঢুকবো কি ঢুকবো না । এমন সময় ভাবি এসে এক ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দিল । আবার বাহিরে বের হতে চাইলাম । কিন্তু পারলাম না । বাইরে থেকে দরজাটা আটকে দিয়েছে ।
কি আর করার আর বাহিরে যাওয়া হবেনা । পাগলির সাথে এখানেই থাকতে হবে ।
পেছন ঘুরে খাটের দিকে তাকিয়ে দেখি পাগলি নাই । ওমা পালাইলো নাকি । এখন কি হবে ।
খাটের নিচে আলমারিতে দেখলাম কোথাও নেই ।এইবার একটু ঘাবড়ে গেলাম । ভয় ভয় হচ্ছে । মেয়েটা গেল কোথায় । এমনসময় মনে হল পিছনে কে যেন গুনগুন করে কিছু পহছে । পেছনে ফিরে দেখি অর্দ্রী চেয়ারে বসে আছে । আর তার সামনে টেবিলে কত গুলা পৃষ্টা আছে যেগুলাতে কি যেন লেখা আছে সেগুলা পড়ছে ।
.
-ওই পাবনার পাগলি ওখানে কি নতুন বউয়ের মতো খাটে এসে ঘোমটা টেনে বসো
-তোর নতুন বউয়ের গোষ্টি কিলাই
-নতুন বউ এভাবে কথা বলে নাকি
-রাখ তোর নতুন বউ, এসব কি
-কোনসব
-এত গুলা চিঠি কার জন্য
এই রে সব দেখে ফেলেছে । এখন কি হবে । আল্লাহ তুমি মোরে বাচাও ।
-কি হলো বল
-আমি কি করবো, ভালো লেগেছিলো তাই লিখেছিলাম, তবে বিশ্বাস করো কাউকে দেইনি ।
-তোর সাহস কি করে হলো অন্য কারো জন্য চিঠি লিখার
-ভুল হয়ে গেছে
-ভুল যখন করেছিস তখন শাস্তি তো পেতেই হবে
-কি শাস্তি
-আমি যতক্ষন সবগুলো চিঠি পড়ে শেষ না করবো ততক্ষণ তুই কান ধরে দাড়িয়ে থাকবি
-এই শাস্তি দিওনা প্লিজ
-তাহলে চিঠি গুলা সবাইরে দেখামু
-এই না না, ধরছি ধরছি
.
কান ধরে দাড়িয়ে আছি আর হ্রামিটা চিঠি পড়ছে । আর মাঝে আমার দিকে তাকিয়ে হাসতেছে । সেই হাসি দেখে আমার পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে ।
-ওই এখন এক পায়ে দাড়িয়ে থাক
-কেন
-এই চিঠিটা পড়ে আমার অনেক রাগ হচ্ছে তাই
--কেন, কি লেখা আছে
-বলতে পারব না অনেক রাগ হচ্ছে
-তবুও বল
-তোমার ঠোঠ দুটো দেখলে শুধু কিস করতে মন চায়
-তো করো
-অর্দ্রর বাচ্চা অর্দ্র, তোরে কিস করতে যামু কোন দুঃখে, চিঠিতে এটা লেখা আছে
-নাউযুবিল্লাহ
-হুহ, এখন ভালো সাজা হচ্চে
-আমি তো ভালোই
-তুই কেমন ভালো সেটা আমার জানা হয়ে গেছে, কান ধরে একপায়ে দাড়িয়ে থাক
কি আর করবো ঘরওয়ালি কা হুকুম । তাই পালন করতেই হবে ।
কান ধরে এক পায়ে দাড়িয়ে আছি । এমন সময় ভাবি এল সাথে কাজিনরাও আছে । আমি হতভম্ভ হয়ে গেলাম ।
-এ কি জানু, তোমার এই অবস্থা কেন
-ওই ওরে জানু বললে তোর মুখ কিন্তু সেলাই করে দিমু
-কেন গো সতিন তোমার জ্বলছে নাকি
-এই তোর মাথা কিন্তু ফাটাইয়া দিমু
-আচ্ছা আর বলবো না ওর এই অবস্থা কেন
-না বলে কারো বাসর ঘরে ঢুকা এটা কি ধরণের বেয়াদবি
-বেয়েদবি তো তুমি করছো সেইজন্যই তো কান ধরে দাড়িয়ে আছো
-আপু গো দেখো তোমার দেবর কত জনকে চিঠি লিখেছে
-এ কি অর্দ্র তুমি এটা কি করেছো
-ভাবি ভুল হয়ে গেছে ওরে একটু বুঝাও
-আমি কিছু জানিনা বাবা, তোমাদের ব্যাপার তোমরা বুঝো গা
বলেই ভাবি চলে গেল । কাজিন রা ও চলে গেল । এখন আমাকেই মেনেজ করতে হবে ।
.
Continue...
.
#অর্দ্র

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 Single Idiots

গল্পঃ #3_Singe_Idiots Part: 02 . লিখাঃ অর্দ্র . -তোদের দুইটারে কতবার বলেছি যে এইবার অন্তত ঝামেলা করিস না(অর্দ্র) -........ -কাজটা কে...